সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার পজিটিভ এর হার কমে আসায় এবং টিকাপ্রাপ্তি অনেকাংশে নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছে করোনা-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৃহস্পতিবার রাতে পরামর্শক কমিটির বৈঠকে এ মতামত উঠে এল।
বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১২টার দিকে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় এবং টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে এখন কোনো বাধা নেই। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে অবশ্যই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বক্তব্যের পর রাতেই পরামর্শক কমিটির বৈঠকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে মত এল।
শেখ হাসিনা বলেছিলেন, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দেশের সব স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এরইমধ্যে আমি স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সেই ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের টিকাও দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত আছেন তাদের পরিবারের সদস্যদেরও টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ যে ব্যবস্থা নিয়েছে; তা বিশ্বের অনেক দেশই পারেনি। দেশে করোনার টিকার কোনো সমস্যা নেই। আমরা যেখান থেকেই পারি কিনে আনছি।
এর আগে গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহামারী করোনা প্রতিরোধে গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এক কোটি ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ১৮ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ১৬৯ জনকে দ্বিতীয় ডোজ করোনার টিকা দেয়া হয়েছে।
এ সময় করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা সংগ্রহ ও বিনামূল্যে টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। কবে থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হবে বৈঠকে সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। স্কুল-কলেজ খোলার পর করণীয় কী কী হবে সেসব বিষয়েও বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া ও খোলার পর দীর্ঘদিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও অনুসরণ পদ্ধতি প্রণয়ন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বৈঠকে। এ বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় পর্যায়ের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকবার চেষ্টা করেও এই মহামারীর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর খোলা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দ্রুত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত গত ১৭ মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় সবশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।